চাঁদপুর পৌর কবরস্থানে দাফনের জন্য জীবিত নবজাতক রেখে যাওয়া এবং পরে মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হন শহরের তালতলায় দি ইউনাইটেড হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় ফারুক হোসেন গাজী (৪৫)। এ ঘটনায় হাসপাতালটির কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে ভর্তি থাকা রোগীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্য স্থানে সেবার ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দি ইউনাইটেড হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন এই হাসপাতালে নানা অনিয়ম হচ্ছিল। ওই নবজাতকের জন্ম হয় এই হাসপাতালে।
এদিকে দাফনের জন্য রেখে যাওয়া নবজাতকের নড়ে ওঠার ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের। পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নবজাতককে কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া ওয়ার্ড বয় ফারুক গাজীকে আটক করেন।
এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে বুধবার চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা করেন পৌর কবরস্থানের কেয়ারটেকার মো. শাহজাহান মিয়াজী।
এদিকে দি ইউনাইটেড হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি বলেন, ‘হাসপাতালে এসে ব্যবস্থাপনায় জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেও কোনো সাড়া মেলেনি। চিকিৎসক নেই, হাসপাতালের প্যাথলজি ও ওটির সঠিক পরিবেশ নেই। একই সঙ্গে পোস্ট অপারেটিভ রোগীর জন্য কোনো সুব্যবস্থা নেই এবং হাসপাতালের কাগজপত্র নবায়ন নেই।’
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং ওটি, প্যাথলজি ও সংশ্লিষ্ট কক্ষ সিলগালা করা হয়েছে। একই সঙ্গে রোগীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্য স্থানে সেবার ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর আমাদের অভিযানে পরিচালিত কার্যক্রম সিভিল সার্জন বরাবর প্রদান করা হবে। সিভিল সার্জন হাসপাতালের নিবন্ধন বাতিলসহ পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে পারবেন।’
ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রফিকুল হাসান ফয়সাল, জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান। অভিযানে চাঁদপুর সদর মডেল থানা-পুলিশ সহযোগিতা করে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত শেষে হাসপাতালের ড্রাগ সনদসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরীক্ষা করে দেখেন জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান।