আওয়ামী লীগ আমলের মতো বদলি বাণিজ্য এখনো অব্যাহত আছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রখ্যাত লেখক ও সাংবাদিক নুরুল কবির। তিনি বলেন, ‘নতুন বন্দোবস্তের কথা বলছেন অথচ বাংলাদেশে অতীতের সরকারগুলোর সময়ে, বিশেষত আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের সময় যেভাবে ঘুস-দুর্নীতি বিস্তার লাভ করেছিল সমাজে সেগুলো এখনো চলছে। সরকারি বড় বড় পদের পরিবর্তনে স্বজনপ্রীতি, দলপ্রীতি—এগুলো এখনো অব্যাহত আছে।’
সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে ‘পয়েন্ট অব অর্ডার’ নামে টক শোতে এই সাংবাদিক এসব বলেন।
নুরুল কবির বলেন, ‘যারা সরকার গঠন করেছে তাদের অধিকাংশই দীর্ঘদিনের সংগ্রামের মধ্যে কেউ ছিলেন না। দু-একজন ব্যতিক্রম থাকতে পারেন। এমনকি জুলাই-আগস্টের সংগ্রামের মধ্যে যে ভয়াবহ পরিস্থিতি হচ্ছে, প্রতিদিন তরুণরা মারা যাচ্ছে, সাধারণ মানুষ যেটা সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি ছিল—প্রতিদিন ৪০ জন ৫০ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে। তারা ওই মিছিল-মিটিংয়ে থাকা তো দূরের কথা, দেখবার জন্যও যান নাই। এ রকম লোকরা যখন রাষ্ট্র পরিবর্তনের পরে সরকারের মেম্বার হয় সেটিই তো হওয়ার কথা।’
এই জ্যেষ্ঠ সাংবদিক বলেন, ‘তরুণদের মধ্যেও তিনজন প্রথমে মন্ত্রিসভায় ছিলেন। যারা মন্ত্রিসভায় ছিলেন না, এনসিপি নামে যারা রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত হয়েছে তারাও ভীষণ প্রভাবশালী এখন পর্যন্ত। তারা একটা নতুন জায়গা করে নেবে, নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরি করবে, মানুষের বৈষম্য দূরীকরণে তারা নীতিগত কতগুলো চাপ প্রয়োগ করবে, সেটা না দেখে আমরা বাস্তবে কী দেখলাম। একজনকে দেখলাম কথা নাই, বার্তা নাই সেই আওয়ামী-বিএনপির স্টাইলে ইলেকশন করবেন বলে এলাকায় এক শ-দেড় শ গাড়ি নিয়ে রওনা হলেন। আরেকজনকে দেখলাম কোনো হিসাব নাই, নিকাশ নাই প্লেনে উঠে গেল ম্যাগজিন নিয়ে। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে এখানে-ওখানে বড় বড় কর্মকর্তা বসানোর পরিষ্কার অভিযোগ আছে।’
সাংবাদিক নুরুল কবির বলেন, ‘আন্দোলনের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্যের মধ্যে একটা ছিল নারীর অংশগ্রহণ। সেটা তরুণীরা যেমন, বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা, তেমনি মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত গৃহিণীরা, মায়েরা পর্যন্ত নেমে এসেছিলেন। কিন্তু সেখানে আমরা দেখলাম এই তরুণ নেতাদের কেউ কেউ খুবই অন্যায়ভাবে অশ্লীলভাবে ও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে বিছানায় নিয়ে যাওয়ার।’
‘আমাদের এখানে দুয়েকজন পণ্ডিত আছেন, যারা দাবি করেছেন এই ছেলেদের নাকি তিনি বছরের পর বছর তৈরি করেছেন। যারা এই ছেলেদের তৈরি করেছেন তাদেরও নৈতিক দায়দায়িত্ব নিতে হবে।’, বলেন নুরুল কবির।