বগুড়ার আদমদীঘিতে ক্লাশে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে নিষেধ করায় হৃদয় হোসেন নামে দশম শ্রেণির এক ছাত্রের মারপিটে প্রধান শিক্ষক আতিয়ার রহমান আহত হয়েছেন। উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের কৈকুড়ি রহিম-মজিদ উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে আহত শিক্ষকের স্ত্রী আদমদীঘি থানায় ওই ছাত্রসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
এ ঘটনায় জড়িত ওই ছাত্র ও অন্যদের শাস্তি চেয়ে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী সোমবার দুপুরে বিদ্যালয় মাঠে ও উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
আহত শিক্ষক আতিয়ার রহমান জানান, সম্প্রতি দশম শ্রেণির ছাত্র হৃদয় হোসেনকে ক্লাশে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে অফিসে এসে হুমকি দিয়ে চলে যায়। বিষয়টি নিয়ে সব শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। সেখানে ছাত্র হৃদয়ের ফুফু সহকারী শিক্ষক দুলালী খাতুনও উপস্থিত ছিলেন। ওই শিক্ষক বিষয়টি বাড়িতে গিয়ে অবগত করেন।
গত ৩০ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে তিনি (প্রধান শিক্ষক) কালাইকুড়ি গ্রামের বাড়ি থেকে বের হয়ে পুকুরে মাছের খাবার দিতে যান। এ সময় ছাত্র হৃদয় তার মায়ের সামনে তাকে মারপিট করে। স্থানীয়রা এসে তাকে উদ্ধার করেন।
এ ব্যাপারে পরদিন তার (প্রধান শিক্ষক) স্ত্রী আম্বিয়া আক্তার আদমদীঘি থানায় হৃদয় হোসেন, তার বাবা, মা ও ফুফুর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এদিকে রহিম-মজিদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতিয়ার রহমানকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিটের ঘটনায় জড়িত হৃদয় হোসেন ও অন্যদের গ্রেফতারের দাবিতে সোমবার দুপুরে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নেন।
বক্তব্য রাখেন- উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক-কর্মচারী সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আবুল কালাম আজাদ, তিলোচ শিববাটি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঞ্জুরুল ইসলাম, কৈকুড়ি রহিম-মজিদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোস্তাক আহম্মেদ, সহকারী শিক্ষক সাইফুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা প্রধান শিক্ষক আতিয়ার রহমানের ওপর হামলাকারী ছাত্র হৃদয় হোসেন ও অন্য আসামিদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। অন্যথায় তারা বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়ার ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
এ ব্যাপারে আদমদীঘি থানার ওসি এসএম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনায় তার স্ত্রী বাদী হয়ে ছাত্র, তার বাবা, মা ও ফুফু শিক্ষিকার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মা ও ফুফু আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। অপর দুই পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।