শিরোনাম :
ভাইয়ের জন্মদিনে গলায় বেলুন আটকে বোনের মৃত্যু ৭ মাস ধরে নারীকে বাসায় আটকে ধর্ষণ করছিলেন নোবেল, ভিডিও ধারণ করে হুমকি দিতেন মধ্যরাতে এনসিপির লোক পরিচয়ে অচেনা লোকজন দরজা ভেঙে বাসায় ঢোকার চেষ্টা, মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেন ধানমণ্ডি থানার ওসি লাগাতার কর্মসূচিতে অবরুদ্ধ নগর ভবন, নাগরিক সেবা বন্ধ ‘আ.লীগের দোসর’ আমলা-কর্মকর্তাদের নাম প্রকাশ ‘বিতর্কিত উপদেষ্টাদের’ পদত্যাগে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ইশরাকের গায়ক নোবেল গ্রেপ্তার ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পরপরই তার্কিশ এয়ারের ইঞ্জিনে আগুনের স্ফুলিঙ্গ, জরুরি অবতরণ দেশে স্টারলিংকের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু জামিন পেলেন নুসরাত ফারিয়া

ট্রান্সশিপমেন্ট

সুবিধা পুনর্বহালে অনুরোধ করবে না সরকার

উন্নয়ন সংবাদ রিপোর্ট
  • আপডেট : শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫

ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা পুনর্বহালের জন্য ভারত সরকারের কাছে আপাতত অনুরোধ করবে না বাংলাদেশ। এ সুবিধা বাতিলের কারণে কলকাতা ও দিল্লি বিমানবন্দর হয়ে এয়ার কার্গোর মাধ্যমে রপ্তানির জন্য তৈরি পোশাকের ট্রাক তাদের দেশে ঢুকতে দিচ্ছে না ভারত। এতে উদ্বিগ্ন রপ্তানিকারকরা। এ সুবিধার আওতায় বাংলাদেশ থেকে পণ্য যায় ৩৬ দেশে।

এ বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে কোনো আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়নি। তবে এ ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। এ ছাড়া বাণিজ্য সচিবসহ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি।

গতকাল সচিবালয়ে ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, হঠাৎ ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করেছে ভারত। তবে এতে বাংলাদেশের সমস্যা হবে না। বুধবার বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সেখানে ক্রেতারাও উপস্থিত ছিলেন। আমাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সংকট কাটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। নিজস্ব সক্ষমতায় প্রতিযোগিতায় যেন কোনো ঘাটতি না হয়, সেটা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। বাণিজ্যিক সক্ষমতা বাড়ানো হবে। একই সঙ্গে রপ্তানির ক্ষেত্রে যোগাযোগে যেন কোনো ঘাটতি না হয়, সে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে– এ বিষয়ে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে সব বলা যাচ্ছে না। প্রতিযোগিতায় আমাদের প্রতিবন্ধকতাগুলো বিশেষ করে কাঠামোগত ও খরচের বিষয়গুলো সমন্বয় করে সক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা করা হবে।

এটা নিয়ে বাংলাদেশ ভারতকে কোনো চিঠি দেবে কিনা– জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আমরা এই মুহূর্তে বিবেচনা করছি না। ভারতের ট্রান্সশিপমেন্টের সুবিধায় কী পরিমাণ পণ্য রপ্তানি হয়– জানতে চাইলে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আমাদের এখান থেকে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টনের মতো পণ্য সড়কপথে গিয়ে ভারতের বিভিন্ন বন্দর বিশেষ করে দিল্লি, কলকাতা বন্দরের মাধ্যমে রপ্তানি হতো।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ধরনের দাবি উঠেছে– বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পাল্টা ট্রানজিট বাতিল করা যায় কিনা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, এটা আমার বিষয় না। আমার বিষয় হচ্ছে ব্যবসায় সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

এ প্রসঙ্গে তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান সমকালকে বলেন, যেসব দেশে বাংলাদেশি পণ্য বেশি রপ্তানি হয়, তার অনেক ক্ষেত্রেই ঢাকা থেকে সরাসরি ফ্লাইট নেই। বিশেষ করে নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস বা জার্মানিতে সরাসরি ফ্লাইট নেই। এর বাইরে অনেক এলাকায় সরাসরি যাত্রীবাহী ফ্লাইট থাকলেও কোনো পণ্যবাহী কার্গো যাতায়াত করে না। তাই আমাদের নির্ধারিত সময়ে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে যাত্রীবাহী প্লেনের ওপর ভরসা করতে হয়। কিন্তু চাহিদার তুলনায় বাংলাদেশি যাত্রীবাহী ফ্লাইটে পণ্য পাঠানোর সুযোগ অনেক কম। তাই বাধ্য হয়েই আমাদের ভারত, দুবাইসহ অন্যান্য দেশের ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে পণ্যবাহী কার্গোতে জার্মানি, স্পেনসহ বিভিন্ন দেশে পোশাক পাঠানো হয়। এ কারণে অন্য কোনো দেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা নিতেই হয়। এর কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, ভারতের বিভিন্ন বিমানবন্দর থেকে এসব গন্তব্যে প্রতিদিন প্রচুর যাত্রীবাহী ফ্লাইট রয়েছে। একই সঙ্গে তাদের অনেক বিশেষ কার্গো ফ্লাইটও রয়েছে। অন্যান্য দেশের কার্গো বিমানও ভারতের বিভিন্ন বিমানবন্দর ব্যবহার করে। তাই বাংলাদেশ থেকে অন্য দেশের পরিবর্তে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে কার্গোতে পণ্য পরিবর্তন তুলনামূলক সহজ ও ব্যয়সাশ্রয়ী। ট্রাকে স্থলবন্দর দিয়ে কলকাতা বা দিল্লি বিমানবন্দর পর্যন্ত পণ্য নিয়ে যাওয়া যায়। তাই সময় ও খরচ দুটিই কম হয়। ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করায় আমাদের উদ্যোক্তাদের অপশন কমে গেল। এর ফলে বিমান ভাড়া বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি সময়ও বেশি লাগবে। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ অন্য দেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা ব্যবহার করে। তা ছাড়া আমরা ভারতের বড় ক্রেতা দেশ। আশা করি, সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করবে দেশটির সরকার।

পণ্যবাহী ট্রাক ফেরত পাঠাচ্ছে ভারত

বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহারের পর বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে। পেট্রাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কার্পাস (গেট পাস) না দেওয়ায় ভারতে প্রবেশ করতে পারেনি।

কাস্টমস ও বন্দর সূত্রে জানা গেছে, মেঘনা ডেনিমস, কারুনি নিট কম্পোজিট, গ্লোবাস গার্মেন্ট, বিজিএস লিমিটেড, ইউনিভার্সেল মিউজিক স্পেনসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের ট্রাক গত দু’দিনে ভারতে প্রবেশ করতে পারেনি।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের কার্গো সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রাকিব বলেন, ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার এসব পণ্য পেট্রাপোল বন্দর হয়ে কলকাতার দমদম এয়ারপোর্ট ব্যবহার করে স্পেনসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়ে আসছিল। এসব পণ্য বাংলাদেশ থেকে আকাশপথে রপ্তানি হলে পরিবহন ব্যয় বেশি পড়ে এবং ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধায় খরচ কম পড়ে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধায় পণ্য যায় ৩৬ দেশে

বিজিএমইএর হিসাবে দেখা গেছে, গত বছরে জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সময়ে ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধায় ৪৬ কোটি ২৩ লাখ ডলারের পোশাক পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। স্থানীয় মুদ্রায় যা ৫ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা। এ পদ্ধতিতে বিশ্বের ৩৬টি দেশে পণ্য রপ্তানি হয়। দেশগুলো হচ্ছে– যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, ব্রাজিল, সুইজারল্যান্ড, চিলি, চীন, কলম্বিয়া, জার্মানি, ডেনমার্ক, ইকুয়েডর, স্পেন, ফ্রান্স, ক্রোয়েশিয়া, ইতালি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জাপান, কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা, মেক্সিকো, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, নেপাল, ভুটান, পেরু, ফিলিপাইন, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, রোমানিয়া, সার্বিয়া, রাশিয়া, সুইডেন, তাইওয়ান ও দক্ষিণ আফ্রিকা।

আরো পড়ুন

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০
৩১  
© All rights reserved © unnayansangbad.com
Developer Design Host BD