আওয়ামী লীগে মনে করতো তাদের সমালোচনা মানেই সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই ভিন্ন চিন্তার অধিকারীদের নির্মূল করার মনোভাবের কারণে তাদের রাজনীতি দূষিত হয়ে গিয়েছিলো।

‘জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের দায়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরাজয় নিয়ে ছায়া সংসদ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।

রাজধানীর এফডিসিতে শনিবার ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি এ অনুষ্ঠানের অয়োজন করে। ছায়া সংসদে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ‘ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন বা আওয়ামী লীগের সমর্থন করেননি তাদের গণহারে নির্মূল করতে আটক করে নির্যাতন, হত্যা ও গুম করা হয়েছে। শেখ হাসিনার জ্ঞাতসারেই এসব করা হয়েছে বলে আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে জানতে পেরেছি।’

‘এসব চিন্তাভাবনার কারণে আওয়ামী লীগ তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থেকে বহুদূর সরে গিয়েছিল। তরুণ ছাত্র ও জনতার প্রতিরোধের মুখে তাই একপর্যায়ে এভাবে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন।’

রাজনীতি একটি জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় মন্তেব্য করে আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ‘যে জাতি রাজনৈতিক দিক থেকে যত সমৃদ্ধ সে জাতি অন্যান্য সব দিকে ততই উন্নতি করতে পারে। তাই রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নতির জন্য যথাযথ রাজনৈতিক দল ও নেতৃত্ব উভয়ই গড়ে তোলা দরকার। এ কথা আমাদের উপলব্ধি করতে হবে। জুলাই-আগস্টে যারা বুক পেতে প্রাণ দিলেন, তাদের ত্যাগের যথাযথ মর্যাদা দানের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘জুলাই গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগ সামাজিক, রাজনৈতিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে। শুধু জুলাই বিপ্লবে সংঘটিত গণহত্যা নয়, পতিত আওয়ামী সরকার গত ১৫ বছরে গুম, খুন, বিনাবিচারে ব্যাপক হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। তাই জনগণ শুধু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী নয়, দল হিসেবেও আওয়ামী লীগকে বিচারের কাঠগড়ায় দেখতে চায়। এখানে প্রতিশোধের কথা কেউ বলছে না, তবে আমাদের মনে রাখতে হবে যে অপরাধীকে বিচার না করে ছাড় দিয়ে সহনশীল রাজনীতির চর্চা করা সম্ভব নয়।