বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে টিএসসির গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচিতে সাড়া দিয়েছে বিপুল সংখ্যক মানুষ। গত চারদিনের সংগ্রহ ও বিতরণ কাজের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। এতে জানানো হয়, মোট নগদ অর্থ সংগ্রহ হয়েছে ৫ কোটি ২৩ লাখ ৩ হাজার ৬০৩ টাকা ৬৮ পয়সা। অন্যদিকে বিভিন্ন খাতে মোট ব্যয় করা হয়েছে ৩০ লাখ ১২ হাজার ৯৭০ টাকা।
রোববার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭ টায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেন মহিউদ্দিন মোহাম্মদ, অদ্বীতি, মেহেদী হাসানসহ প্রমূখ।
গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচির ব্যাপারে তারা জানান, গত ২১ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বন্যা এবং এর ফলে সৃষ্ট মানবিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি ঘোষণা করে। ২২আগস্ট থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে একটি বুথের মাধ্যমে নগদ টাকা এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহ করা শুরু হয়। উক্ত কর্মসূচিতে অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়ার ফলে পর্যায়ক্রমে ডাকসু ক্যাফেটেরিয়া এবং সেন্ট্রাল ফিল্ড নিয়ে কর্মসূচি চলমান রয়েছে।
অর্থ সংগ্রহের হিসাবে বলা হয়, গত ২২থেকে ২৫ আগস্ট বিকাল ৫টা পর্যন্ত আমাদের নগদ অর্থ ৪,৩৯,০১,৬৯০ টাকা সংগ্রহ করা হয়। ২৫ আগস্ট বিকাল ৫টা পর্যন্ত মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যমে আসে ৬২ লাখ ৯৪ হাজার ১২০ টাকা। এছাড়া এ পর্যন্ত ব্যাংকিং মাধ্যমে জমা পড়ে ২১ লাখ ৭ হাজার ৭৯৩ টাকা ৬৮ পয়সা। এতে মোট সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ কোটি ২৩ লাখ ৩ হাজার ৬০৩ টাকা ৬৮ পয়সা।
ব্যয়ের হিসাবে বলা হয়, গত ২২ থেকে ২৫ আগস্ট বিকাল ৫টা পর্যন্ত বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য সংগৃহীত ফান্ড থেকে সকল প্রকার খাদ্যদ্রব্য কেনা এবং পরিবহনসহ যাবতীয় খরচ হয় মোট ৩ লাখ ১২ হাজার ৯৭০ টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, সংগ্রহীত অর্থ ও খাদ্য সামগ্রী দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বন্যাকবলিত জেলায়গুলোয় সশরীরে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি থেকে সংগ্রহীত এবং ক্রয়কৃত সামগ্রী ব্যবহার করে একটি পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় শুকনো খাদ্য এবং ওষুধের প্যাকেজ তৈরি করা হয়। এরকম ৬০০ তেকে ১ হাজার টি প্যাকেজ এবং ২০ থেকে ৩০ কেস পানি দিয়ে একটি ট্রাক প্রস্তুত করা হয়।
বন্যাকবলিত এলাকায় ২২ থেকে ২৫ আগস্ট বিকাল ৫টা পর্যন্ত যে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় যেখানে ৫০টি ট্রাকের মাধ্যমে প্রায় ৫০ হাজারের অধিক প্যাকেজ পাঠানো হয়েছে। এর মাঝে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে ৩ হাজার প্যাকেজ হেলিকপ্টারযোগে বন্যাকবলিত দুর্গম অঞ্চলগুলোতে বণ্টন করা হয়েছে এবং ৩ লাখ ৯৬ হাজার ৫০০ টাকা নগদ সহায়তা দেয়া হয়েছে।