শিরোনাম :

নারী কয়েদির সঙ্গে কারারক্ষীর অনৈতিক সম্পর্ক, দেখে ফেলায় বিপাকে আরেক নারী হাজতি

উন্নয়ন সংবাদ রিপোর্ট
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

প্রধান কারারক্ষী ও নারী কয়েদির অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় এক নারী হাজতিকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। গাইবান্ধা জেলা কারাগারের ভেতরে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনা প্রকাশ করলে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার কারারক্ষী আশরাফুল ইসলামের শাস্তি চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর মা করিমন নেছা। ভুক্তভোগী ওই নারী ৫ বছর ধরে মাদক মামলায় গাইবান্ধা হাজতে রয়েছেন।

অভিযোগে ভুক্তভোগীর মা উল্লেখ করেন, কিছু দিন আগে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে কর্মরত প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ইসলাম ও মহিলা কয়েদির (রাইটার) অনৈতিক কর্মকাণ্ড দেখে ফেলেন তার মেয়ে। এতে আশরাফুল ও মহিলা কয়েদি তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং এ ঘটনা কাউকে বললে হত্যা করে হৃদ্রোগে মৃত্যু হয়েছে বলে চালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। ভুক্তভোগী বিষয়টি কাউকে জানাবে না বলার পরও তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, করিমন নেছা একাধিকবার মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে গাইবান্ধা কারাগারে এলেও মেয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়নি। অবশেষে তার মেয়ে গাইবান্ধা আদালতে হাজিরার তারিখে গেলে সাক্ষাৎ পান করিমন নেছা। এর পর মায়ের কাছে কারাগারের ঘটনার বিবরণ দেন।

ভুক্তভোগীর মা আরও জানিয়েছেন, ‘সুবেদার আশরাফুল আমার মেয়েকে বিভিন্ন সময়ে কারাগারের ভেতরে কুপ্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্তসহ হাত ও পরনের কাপড় ধরে টানাহেঁচড়া করে একাধিকবার শ্লীলতাহানি ঘটায়। আমার মেয়েকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে প্রলুব্ধ করতে থাকে। জেল সুপারকে বিচার দেওয়ার কথা বললে আমার মেয়েকে প্রকাশ্যে সুবেদার আশরাফুল জানান, জেলার সাহেব তার লোক। সে নিজের টাকা খরচ করে জেলারকে বদলি করে নিয়ে এসেছেন। জেলার তার কোনো বিচার করতে পারবে না বলে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করেন।’

ভুক্তভোগীর মা মোছা. করিমন নেছা লিখিত অভিযোগে আরও জানান, গত ২০ মার্চ দুপুর বেলা সুবেদার আশরাফুলের নেতৃত্বে মহিলা কয়েদি মেঘলা খাতুন, রেহেনা, আলেফা এবং কারারক্ষী তহমিনা, শাবানা গং পরিকল্পিতভাবে কারাগারের মহিলা ইউনিটের ভেতরের বারান্দায় লাঠি দ্বারা অতর্কিত আমার মেয়ের বুকে, পিঠে, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়ি মারপিট করে। একপর্যায়ে সুবেদার আশরাফুল, সিআইডি আনিস এবং হাবিলদার মোস্তফা কারাগারের মহিলা ইউনিটের ভেতরে প্রবেশ করে আমার মেয়েকে টেনেহিঁচড়ে মহিলা ইউনিটের বারান্দা থেকে সেলের ভেতর নিয়ে যায়। আমার মেয়ের দুই হাত-পা হ্যান্ডকাপ ও রশি দিয়ে বেঁধে লাঠি দিয়ে দুই উরু ও পায়ের পাতায় বেদম মারপিটসহ পরনের কাপড় (কামিজ) টেনে ছিঁড়ে ফেলে বিবস্ত্র করে। এ ঘটনা বাইরে প্রকাশ করলে মৃত্যুর হুমকি দেওয়া হয়।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গাইবান্ধা জেলা কারাগারের প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমি এর সঙ্গে জড়িত না। তা ছাড়া কারাগারের নারী ওয়ার্ডে কোনো পুরুষ কারারক্ষীর ডিউটিই থাকে না। সেখানে পুরুষদের প্রবেশ কোনোভাবেই সম্ভব না। কিন্তু আমার নাম কেন আসছে তা জানি না।

এ বিষয়ে গাইবান্ধা কারাগারের জেল সুপার জাভেদ মেহেদী বলেন, এডিসি মহোদয় তদন্তে এসেছিলেন। ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে। এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে ভেতরের ব্যাপারে পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে একটি ব্যাপার তৈরি হয়েছে, যা ফোনে বলা সম্ভব নয়। তবে ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিসি) মো. মশিউর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার বিষয়টি তদন্ত করেছি। খুব দ্রুত জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেব। এর পরেই জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে জেলা প্রশাসন।

আরো পড়ুন

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
© All rights reserved © unnayansangbad.com
Developer Design Host BD