বিশ্বকাপে চরম ব্যর্থ হয়েছে ১৯৯৬ এর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা। পয়েন্ট টেবিলের নবম স্থানে থেকে বিশ্বকাপ শেষ করায় ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার যোগ্যতা অর্জনেও ব্যর্থ হয়েছে দলটি। লঙ্কানদের যখন এমন ভরাডুবি তখন দেশটির মন্ত্রী, ক্রিকেট বোর্ড কর্তা ও আদালতের হস্তক্ষেপের পর মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে আইসিসির নিষেধাজ্ঞা।
লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের (এসএলসি) কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপের কারণে দলটির সদস্যপদ স্থগিত করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এতে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন আর কোনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিতে পারবে না শ্রীলঙ্কা দল।
বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে লজ্জাজনক হারের পরই দুর্নীতির অভিযোগ এনে এসএলসিকে ভেঙে দেয় শ্রীলঙ্কার ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। তখন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গাকে চেয়ারম্যান করে বোর্ডের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি গঠন করে। কিন্তু শ্রীলঙ্কার আপিল আদালত অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির কার্যক্রম দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন। এরপরই আইসিসি থেকে নিষেধাজ্ঞা আসে।
অর্জুনা রানাতুঙ্গার দাবি, শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট আসলে ধ্বংসের পাঁয়তারা চলছে। এর জন্য যাবতীয় কলকাঠি নাড়ছেন এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) সভাপতি ও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সচিব জয় শাহ। শ্রীলঙ্কার সাংবাদিক চামুদিতা সামারাবিক্রমাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক এ দাবি তুলেছেন রানাতুঙ্গা।
ওই সাক্ষাৎকারে নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর। সাক্ষাৎকারে রানাতুঙ্গার বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটকে জয় শাহ নিয়ন্ত্রণ করছে। সে সৌরভ গাঙ্গুলীকে বিসিসিআইয়ের সভাপতি বানিয়েছিল এবং রাজনীতিতে যোগ দিতে বলেছিল। প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় সে গাঙ্গুলীকে বরখাস্তও করেছে।’
ওই সাংবাদিকের ইউটিউব চ্যানেল ‘ট্রুথ উইথ চামুদিতা’য় সিংহল ভাষায় সাক্ষাৎকারটি দিয়েছেন রানাতুঙ্গা। স্বাভাবিকভাবেই জয় শাহর সিংহল ভাষা বোঝার কথা নয়। তবে রানাতুঙ্গা মনে করেন, তার কথাগুলোকে ইংরেজিতে অনুবাদ করে জয় শাহর কাছে পৌঁছে দিলে তিনি তার বাবার (ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ) প্রভাব খাটিয়ে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটকে ধ্বংস করে দেবেন।
রানাতুঙ্গা বলেন ‘জয় শাহ এমন একজন, আপনি যদি এসব কথা ইংরেজিতে অনুবাদ করে প্রকাশ করেন, তাহলে সে ওর বাবার প্রভাব খাটিয়ে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের সর্বনাশ করে ছাড়বে। শুধু বাবা ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার কারণেই ওর এত ক্ষমতা।’
এসময় তিনি অভিযোগ করেন , লঙ্কান বোর্ড কর্মকর্তাদের সঙ্গে জয় শাহর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে যে সবাই বিসিসিআইয়ের আজ্ঞাবহ। ‘এসএলসির কর্মকর্তা ও জয় শাহর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে বিসিসিআইয়ের ধারণা, ওরা এসএলসিকে চাইলেই পদদলিত ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ভারতের একটা লোক শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। ওর চাপে এসএলসি তছনছ হয়ে যাচ্ছে।’ যুক্ত করেন শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক।